জানা থেকে অজানায় গমনই প্রকৃত আরোহের প্রাণ- ধারণাটির যৌক্তিকতা বিশ্লেষণ
এইচএসসি ২০২৪ এর মানবিক বিভাগের সুপ্রিয় শিক্ষার্থীবৃন্দ, আশা করছি তোমরা খুব ভালো আছো। তোমাদের জন্য আজ এইচএসসি পরীক্ষা ২০২৪ পঞ্চম সপ্তাহের যুক্তিবিদ্যা ২য় পত্র বিষয়ের অ্যাসাইনমেন্ট এর বাছাইকরা উত্তর- জানা থেকে অজানায় গমনই প্রকৃত আরোহের প্রাণ ধারণাটির যৌক্তিকতা বিশ্লেষণ নিয়ে হাজির হলাম।
আজকের আলোচনার সঠিকভাবে অনুশীলনের মাধ্যমে তোমরা দেশের সরকারি-বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহের জন্য ২০২৪ সালের এইচএসসি পরীক্ষার পঞ্চম সপ্তাহের মানবিক বিভাগের শিক্ষার্থীদের জন্য প্রদানকৃত যুক্তিবিদ্যা ২য় পত্র অ্যাসাইনমেন্ট এর সমাধান খুব ভালো ভাবে সম্পন্ন করতে পারবে।
আমরা এইচএসসি পরীক্ষা ২০২৪ এর যুক্তিবিদ্যা ২য় পত্র এসাইনমেন্টের দেওয়া নির্দেশনা সমূহ যথাযথভাবে অনুসরণ করে প্রশ্নে উল্লেখিত নির্দেশনাসমূহ ধারাবাহিকভাবে আলোচনা করার চেষ্টা করব যাতে তোমাদের অ্যাসাইনমেন্ট লিখতে সুবিধা হয়।
এইচএসসি ২০২৪ পঞ্চম যুক্তিবিদ্যা ২য় পত্র অ্যাসাইনমেন্ট
অ্যাসাইনমেন্ট: জানা থেকে অজানায় গমনই প্রকৃত আরােহের প্রাণ-ধারণাটির যৌক্তিক বিশ্লেষণ;
নির্দেশনা (সংকেত/ধাপ/পরিধি) :
- ক) আরােহমূলক লম্ফ, কৃত আরােহ ও প্রকৃত আরােহের প্রকারভেদ উপস্থাপন;
- খ) বৈজ্ঞানিক ও অবৈজ্ঞানিক আরােহের সংজ্ঞা উদাহরণসহ লেখা;
- গ) বৈজ্ঞানিক ও অবৈজ্ঞানিক আরােহের সংজ্ঞা দিয়ে সম্পর্ক ব্যাখ্যা;
- ঘ) জানা থেকে আজানায় গমনই প্রকৃত আরােহের প্রাণ- ধারণাটির যৌক্তিকতা নিরূপন ও নিজস্ব মত উপস্থাপন;
এইচএসসি পরীক্ষা ২০২৪ পঞ্চম সপ্তাহের যুক্তিবিদ্যা ২য় পত্র বিষয়ের অ্যাসাইনমেন্ট এর উত্তর
(ক) আরােহমূলক লম্ফ, কৃত আরােহ ও প্রকৃত আরােহের প্রকারভেদ
আরােহ হলাে যুক্তিবিদ্যার অন্যতম মৌলিক আলােচনা । গ্রিক দার্শনিক এরিস্টটলের দর্শনে আমরা আরােহের বিষয় নিয়ে আলােচনা দেখতে পাই । পরবর্তীতে আধুনিক পাশ্চাত্য দার্শনিক বেকন , মিল , যুক্তিবিদ হয়েস , বেইন , কার্ভেথ রীড , অভিজ্ঞতাবাদী দার্শনিক ডেভিড হিউম প্রমুখের চিন্তা – চেতনায় আরােহ সম্পর্কিত আলােচনা বিকশিত হয় । তাদের চিন্তা চেতনায় আমরা দেখতে পাই , আরােহ অনুমান অভিজ্ঞতাভিত্তিক অনুমান । এ অনুমানের বাস্তবতা নির্ভর করে ঘটনার পর্যবেক্ষণের উপর ।
আরােহ অনুমানের আশ্রয়বাক্যগুলাে প্রকৃতি নির্ভর । বিশেষ ঘটনা পর্যবেক্ষণ করে সার্বিক সংশ্লেষক বাক্য স্থাপন করাই আরােহের প্রধান উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য । গতানুগতিক যুক্তিবিদেরা অবরােহের মতাে আরােহের ব্যাপারেও অনুমানের ক্ষেত্রে সর্বশেষ গুরুত্ব আরােপ করেন । আরােহ শব্দের ইংরেজি শব্দ ‘ Induction বা ল্যাটন শব্দ Epagogue ( এপাগগ ) থেকে উদ্ভূত । যুক্তিবিদ্যার জনক গ্রিক দার্শনিক এরিস্টটল ( খ্রি.পূ : ৩৮৪-৩২২ ) এ শব্দের উদ্ভাবক । আরােহ হচ্ছে বিশেষ আশ্রয়বাক্যের উপর ভিত্তি করে সার্বিক সিদ্ধান্তে পৌছার পদ্ধতি । এরিস্টটল মনে করেন , বিশেষ দৃষ্টান্তের সাহায্যে সার্বিক যুক্তিবাক্য প্রতিষ্ঠা করার প্রক্রিয়াকে আরােহ বলে ।
আরােহের লক্ষ্য হলাে বস্তুগত সার্বিক সত্য প্রতিষ্ঠা করা । বিভিন্ন যুক্তিবিদ বিভিন্নভাবে আরােহের সংজ্ঞা প্রদান করেছেন।
১। যুক্তিবিদ মিলের মতে , “ আরােহ হচ্ছে মনের সেই প্রক্রিয়া যার সাহায্যে আমরা অনুমান করি যে , যাকে আমরা বিশেষ বিশেষ ক্ষেত্রে সত্য বলে জানি তা সব ক্ষেত্রেই সত্য হবে।
২l যুক্তিবিদ ফাউলার – এর মতে , “ আরােহ হলাে বিশেষ থেকে সার্বিক অথবা কম ব্যাপক থেকে বেশি ব্যাপক বাক্যের একটি বিধিসঙ্গত অনুমান । “
৩। যুক্তিবিদ যােসেফের মতে , “ বিশেষ বিশেষ দৃষ্টান্তের সাদৃশ্য বিচার – বিশ্লেষণের মাধ্যমে সার্বিক দৃষ্টান্ত প্রতিষ্ঠার সারধর্মকে আরােহ বলে ।
৪। যুক্তিবিদ কার্ভেথ রীড বলেন , “ আরােহ বলতে আমরা বুঝি এমন একটি অনুমান যেখানে প্রকৃতির নিয়মানুবর্তিতায় বিশ্বাস স্থাপন করে পর্যবেক্ষণের ওপর নির্ভর করে আমরা সার্বিক সংশ্লেষক যুক্তিবাক্যে পদার্পণ করি ।
আরােহের প্রকারভেদ নিয়ে যুক্তিবিদদের মধ্যে মতভেদ রয়েছে। তবে যুক্তিবিদ মিল প্রদত্ত আরােহের প্রকারভেদই অধিকতর গ্রহণযােগ্য । যুক্তিবিদ মিল আরােহকে প্রথমত দুই ভাগে ভাগ করেন। যথা :
( ক ) প্রকৃত আরােহ ( Induction Proper )
( খ ) অপ্রকৃত আরােহ ( Induction Improper )।
প্রকৃত আরােহ : যে আরােহে আরােহের প্রকৃত গুণ এবং প্রধান মৌলিক বৈশিষ্ট্য বর্তমান থাকে তাকে প্রকৃত আরােহ বলে । অর্থাৎ যে আরােহে আরােহমূলক লক্ষথাকে তাকে প্রকৃত আরােহ বলে । প্রকৃত আরােহকে আবার তিন ভাগে ভাগ করা হয় । যথা :
- ১। বৈজ্ঞানিক আরােহ ( Scientific Induction )
- ২। অবৈজ্ঞানিক আরােহ ( Unscientific Induction ) এবং
- ৩। সাদৃশ্যমূলক অনুমান ( Analogy )
(খ) বৈজ্ঞানিক ও অবৈজ্ঞানিক আরােহের সংজ্ঞা উদাহরণসহ
বৈজ্ঞানিক আরােহেরসংজ্ঞা :
প্রকৃতির নিয়মানুবর্তিতা নীতি ও কার্যকারণ নিয়মের উপর নির্ভর করে কয়েকটা বিশেষ দৃষ্টান্ত পর্যবেক্ষণের অভিজ্ঞতা থেকে একটা সাধারণ সংশ্লেষক যুক্তিবাক্য স্থাপন করার পদ্ধতিকে বৈজ্ঞানিক আরােহ বলে । দৃষ্টান্তস্বরূপ; “মানুষ মরণশীল।”
আমরা রহিমকে মরতে দেখেছি , করিমকে মরতে দেখেছি ।এখন আমরা কয়টি বিশেষ সত্যের উপর ভিত্তি করে যখন অনুমান করি সকল মানুষ হয় মরণশীল ‘ তখন এই সার্বিক সত্যটি আমাদের প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতার মধ্যে থাকেনা । এর কিছু অংশ মরণশীলতা ছাড়া বাকি সম্পূর্ণই আমাদের অভিজ্ঞতার বাইরে , তা যে সত্য হবে এর নিশ্চয়তায় এবং বিশেষ থেকে সার্বিক গমনের পিছনে যুক্তিগ্রাহ্য কারণ থাকা আবশ্যক । সে কারণেই আরােহ অনুমানের কাজ হচ্ছে । আবিষ্কার , বিশ্লেষণ ও প্রমাণ করা ।
অবৈজ্ঞানিক আরোহঃ
যে আরোহ অনুমানে কোন কার্য-কারণ সম্পর্ক নির্ণয় না করে শুধুমাত্র প্রকৃতির নিয়মানুবর্তিতা নীতি ও ব্যতিক্রমহীন অবাধ অভিজ্ঞতার উপর নির্ভর করে একটি সার্বিক সংশ্লেষক যুক্তিবাক্য স্থাপন করা হয় তাকে অবৈজ্ঞানিক আরোহ অনুমান বলে। অবৈজ্ঞানিক আরোহে আমরা আমাদের দৈনন্দিন অভিজ্ঞতালব্ধ জ্ঞানের উপর ভিত্তি করে একটি সার্বিক সিদ্ধান্ত অনুমান করি। এ প্রসঙ্গে যুক্তিবিদ মিল বলেন, “যে সব বাক্য আমাদের অভিজ্ঞতার অন্তরগত প্রত্যেক ঘটনার ক্ষেত্রে সত্য সেই সব বাক্য সাধারণ সত্যে অভিষিক্ত করাই হলো অবৈজ্ঞানিক আরোহ।”
অবৈজ্ঞানিক আরোহের মূল কথা হলো- ‘এ ধরনের ঘটনা সর্বদায় ঘটতে দেখেছি, এর বিপরীত কোন দৃষ্টান্ত কখনও চোখে পড়েনি; সুতরাং এ ধরনের ঘটনা সব ক্ষেত্রেই সত্য।’ উদাহরণস্বরূপঃ সকল কাক হয় কালো। আমরা আমাদের অভিজ্ঞতায় শুধুমাত্র কালো রঙের কাক দেখেছি, ভিন্ন কোন রঙের কাক কখনও চোখে পড়েনি। সুতরাং কাকের কালো রঙ সম্বন্ধে আমাদের এ অবাধ ও ব্যতিক্রমহীন অভিজ্ঞতার উপর নির্ভর করে আমরা অনুমান করি যে, সকল কাক হয় কালো।
(গ) বৈজ্ঞানিক ও অবৈজ্ঞানিক আরােহের সংজ্ঞা দিয়ে সম্পর্ক ব্যাখ্যা
বৈজ্ঞানিক আরোহঃ যে আরোহ অনুমানে প্রকৃতির নিয়মানুবর্তিতা নীতি ও কার্য-কারণ নিয়মের উপর নির্ভর করে কয়েকটি বিশিষ্ট দৃষ্টান্তের অভিজ্ঞতার সাহায্যে একটি সার্বিক সংশ্লেষক যুক্তিবাক্য স্থাপন করা হয় তাকে বৈজ্ঞানিক আরোহ অনুমান বলে।
অবৈজ্ঞানিক আরোহঃ যে আরোহ অনুমানে কোন কার্য-কারণ সম্পর্ক নির্ণয় না করে শুধুমাত্র প্রকৃতির নিয়মানুবর্তিতা নীতি ও ব্যতিক্রমহীন অবাধ অভিজ্ঞতার উপর নির্ভর করে একটি সার্বিক সংশ্লেষক যুক্তিবাক্য স্থাপন করা হয় তাকে অবৈজ্ঞানিক আরোহ অনুমান বলে।
বৈজ্ঞানিক আরােহ ও অবৈজ্ঞানিক আরােহের সম্পর্ক :
বৈজ্ঞানিক আরােহ ও অবৈজ্ঞানিক আরােহের মধ্যে পার্থক্য নির্ণয় করতে গেলে বিষয় দুটিকে সাদৃশ্য , পার্থক্য এবং পরস্পর নির্ভরশীলতার দৃষ্টিকোণ থেকে বিশ্লেষণ করতে হয় । এই হিসাবে বৈজ্ঞানিক ও অবৈজ্ঞানিক আরােহের সম্পর্ক নির্ণয় করতে গিয়ে আমরা যে সাদৃশ্য ও পার্থক্যগুলাে দেখতে পাই সেগুলাে নিম্নররূপে বর্ণনা করা গেল :
সাদৃশ্য :
১ . বৈজ্ঞানিক আরােহ যেমন প্রকৃত আরােহ তেমনি অবৈজ্ঞানিক আরােহ প্রকৃত আরােহের অন্তর্গত একটি অন্যতম প্রকরণ ।
২. বৈজ্ঞানিক ও অবৈজ্ঞানিক আরােহ উভয়েরই লক্ষ্য থাকে সিদ্ধান্ত হিসাবে একটি সার্বিক সংশ্লেষক বাক্য প্রতিষ্ঠা করা।
৩ বৈজ্ঞানিক ও অবৈজ্ঞানিক আরােহ নির্বিশেষে উভয়েই পর্যবেক্ষণ এবং প্রকৃতির নিয়মানুবর্তিতা নীতির উপর নির্ভরশীল।
৪ বৈজ্ঞানিক আরােহের মতাে অবৈজ্ঞানিক আরােহ পদ্ধতিতেও রয়েছে প্রকৃত আরােহের মূল বৈশিষ্ট্য আরােহমূলক লক্ষ্য।
পার্থক্য :
১. মূলনীতি প্রয়ােগের পার্থক্য : বৈজ্ঞানিক আরােহে প্রকৃতির নিয়মানুবর্তিতা নীতি এবং কার্য কারণ নীতি এ দু’টি পরম নিয়মের উপর নির্ভর করে সিদ্ধান্ত হিসাবে সার্বিক সংশ্লেষক বাক্য প্রতিষ্ঠা করা হয় । পক্ষান্তরে , অবৈজ্ঞানিক আরােহে শুধু প্রকৃতির নিয়মানুবর্তিতা নীতি ব্যবহার করে সার্বিক সংশ্লেষক সিদ্ধান্ত স্থাপন করা হয় ।
২. নিশ্চয়তার মাত্রাগত পার্থক্য; বৈজ্ঞানিক আরােহে কার্য – কারণ সম্পর্ক স্থাপন করা হয় বলে এর সিদ্ধান্ত নিশ্চিত । অপরপক্ষে অবৈজ্ঞানিক আরােহের সিদ্ধান্ত কার্য – কারণের উপর ভিত্তি করে হয় না বলে এর সিদ্ধান্ত সম্ভাব্য ।
৩. অপনয়ন সুত্র প্রয়ােগের পার্থক্য :বৈজ্ঞানিক আরােহ বিশ্লেষণের সাহায্যে গ্রহণ করা হয় বলে এই পদ্ধতিতে অপনয়নের মাধ্যমে অপ্রাসঙ্গিক বিষয়গুলাে বাদ দেয়া হয় । অপরপক্ষে , অবৈজ্ঞানিক আরােহে বিশ্লেষণের কোন প্রচেষ্টা অবৈজ্ঞানিক আরােহে বিশ্লেষণের কোন প্রচেষ্টা থাকে না বলে এতে অপনয়নের সূত্র প্রয়ােগ করা সম্ভব হয় না ।
৪. স্তর অতিক্রমের পার্থক্য : বৈজ্ঞানিক আরােহের বেলায় নিরীক্ষণ , বিশ্লেষণ , অপণয়ন , প্রকল্প গঠন , সার্বিকীকরণ এবং সিদ্ধান্ত প্রণয়নের বিভিন্ন স্তরগুলাে অতিক্রম করতে হয় । কিন্তু অবৈজ্ঞানিক আরােহ পদ্ধতিতে সিদ্ধান্ত টানতে হলে এসব স্তর অতিক্রম করতে হয় । শুধু প্রতিকূল দৃষ্টান্তবিহীন অবাধ অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে এর সিদ্ধান্ত প্রতিষ্ঠা করা হয় ।
জানা থেকে অজানায় গমনই প্রকৃত আরোহের প্রাণ ধারণাটির যৌক্তিকতা বিশ্লেষণ
৫. দৃষ্টান্তের পর্যবেক্ষণের পার্থক্য : বৈজ্ঞানিক আরােহে সদর্থক ও নঞর্থক উভয় প্রকার দৃষ্টান্ত পর্যবেক্ষণ করে সার্বিক সংশ্লেষক সিদ্ধান্ত প্রতিষ্ঠা করা হয় । কিন্তু অবৈজ্ঞানিক আরােহে শুধু সদর্থক দৃষ্টান্তগুলােকে পর্যবেক্ষণ করা হয় ।
৬. পদ্ধতিগত পার্থক্য : বৈজ্ঞানিক আরােহ প্রকৃতিগতভাবে একটি জটিল পদ্ধতি । আর অবৈজ্ঞানিক আরােহ একটি সহজ সরল পদ্ধতি ।
৭. দৃষ্টান্তের মানগত পার্থক্য ও বৈজ্ঞানিক আরােহ অনুমানে দৃষ্টান্তসমূহের প্রাসঙ্গিগতা ও অন্তরনিহিত গুণের উপর গুরুত্ব দেয়া হয় । অপরপক্ষে , অবৈজ্ঞানিক আরােহে দৃষ্টান্তে সমূহের গুণগত বৈশিষ্ট্যর উপর বেশী গুরুত্ব না দিয়ে দৃষ্টান্তের সংখ্যার উপর বেশী গুরুত্ব দেয়া হয় ।
(ঘ) জানা থেকে আজানায় গমনই প্রকৃত আরােহের প্রাণ- ধারণাটির যৌক্তিকতা নিরূপন ও নিজস্ব মত উপস্থাপন
জানা থেকে অজানা গমনে প্রকৃত আরোহের প্রান নিম্নে তা ব্যাখ্যা করা হলো :
এটি ব্যাখ্যা করার জন্য প্রথমে আমাদের বুঝতে হবে প্রকৃত আরোহ বলতে কি বুঝায়। আরােহে আরােহের প্রকৃত গুণ এবং প্রধান মৌলিক বৈশিষ্ট্য বর্তমান থাকে তাকে প্রকৃত আরােহ বলে। অর্থাৎ যে আরােহে আরােহমূলক লক্ষ থাকে তাকে প্রকৃত আরােহ বলে।
জানা থেকে অজানায় গমন প্রকৃত আরােহের প্রাণ ধারণার যৌক্তিকতা নিরূপণ- ” আবােহ অনুমানের জানা আশ্রয়বাক্য থেকে অজানা সিদ্ধান্তে যাওয়ার প্রক্র্যিাকে । আরােহমূলক লম্ফ বলে । যেমন- x , yও z নামক ব্যক্তির মৃত্যু দেখে সকল মানুষ হয় মরণশীল ‘ এরূপ অনুমান করার প্রবণতা হলাে আরােহমূলক লম্ফ । আরােহমূলক লক্ষ ছাড়া প্রকৃত আরােহের সিদ্ধান্ত নেওয়া যায় না । এ কারণে আরােহমূলক লম্ফকে আরােহের প্রাণ বলা হয়। আরােহে আমরা জানা থেকে অজানায় গমন করি অর্থাৎ দেখা ঘটনা থেকে অদেখা বিশেষ দৃষ্টান্তসমূহ প্রত্যক্ষ করি এবং তা থেকে সার্বিক সিদ্ধান্ত অনুমান করি । এভাবে আমরা জানা থেকে অজানার উদ্দেশ্য লক্ষ্য প্রদান করি । এই লক্ষ্য প্রদানে ঝুঁকি আছে । কিন্তু তা সত্ত্বেও মিল এবং বেইন মনে করেন যে , আরােহমূলক লক্ষ্য হচ্ছে আরােহের প্রাণ। যে অনুমানে এই বৈশিষ্ট্যটি নেই , সে অনুমান আরােহ নয় ।
আরােহ দু’টো পূর্ব অনুমানের উপর নির্ভর করে । যথা-
( ১ ) প্রাকৃতির রাজ্যের নিয়মের ব্যতিক্রম হয় না । প্রথমেই এই সত্যটা স্বীকার করে নিলে আরােহ জানা থেকে অজানায় বিশেষ থেকে সার্বিক সিদ্ধান্তে আমরা যেতে পারিনা । প্রকৃতির নিয়মানুবর্তিতা নীতিতে বিশ্বাসের ফলেই আমরা বিশেষ কয়েকটা দৃষ্টান্ত দেখে সার্বিক সিদ্ধান্ত অনুমান করতে পারি । প্রকৃতির নিয়মানুবর্তিতা নিয়মের ভিত্তিতে সার্বিক সিদ্ধান্ত উপনীত হবার আগে অবশ্যই কার্যকারণ নিয়মের ভিত্তিতে কার্যকারণ সম্পর্কটা আবিষ্কার করতে হবে।
( ২ ) কার্যকারণ নিয়মের অর্থ হচ্ছে : প্রতিটি ঘটনারই একটি বিশেষ কারণ আছে । সমস্ত পার্থিব ব্যাপারই কার্যকারণ সম্পর্কযুক্ত । যেমন , কার্যকারণ নিয়মের ভিত্তিতেই আমরা মানুষ ‘ ও ‘ মরণশীলতা’র মধ্যে একটা কার্যকারণ সম্পর্ক আবিষ্কার করি । এর পরেই আমরা প্রকৃতির নিয়মানুবর্তিতা নীতি আবিষ্কার করি । এর পরেই আমরা প্রকৃতির নিয়মানুবর্তিতা নীতির উপর ভিত্তি করে আরও অনুমান করতে পারি যে , সকল মানুষ হয় মরণশীল ‘ । উপরােক্ত আলােচনা থেকে দেখা যায় যে” জানা থেকে অজানা গমন করা হয় তাই এটিকে প্রকৃত আরােহের প্রাণ “-উক্তিটি যথার্থ বলে আমি মনে করি ।
এই ছিল তোমাদের এইচএসসি পরীক্ষা ২০২৪ পঞ্চম সপ্তাহের যুক্তিবিদ্যা ২য় পত্র বিষয়ের অ্যাসাইনমেন্ট এর বাছাইকরা উত্তর- জানা থেকে অজানায় গমনই প্রকৃত আরোহের প্রাণ ধারণাটির যৌক্তিকতা বিশ্লেষণ ।
আরও দেখুন:
- যৌথমূলধনী কোম্পানির মূলধনের ধারণা ও শেয়ার ইস্যু সংক্রান্ত লেনদেনের হিসাবরক্ষণ সহায়ক তথ্য
- এইচএসসি ২০২৪ পঞ্চম সপ্তাহের অ্যাসাইনমেন্ট প্রকাশিত | সকল বিভাগ পিডিএফ ডাউনলোড
- এইচএসসি ২০২৪ ৫ম সপ্তাহের অ্যাসাইনমেন্ট রসায়ন উত্তর
- বৈশ্বিক উষ্ণতা ও জলবায়ু পরিবর্তনের প্রেক্ষিতে কৃষি উন্নয়নে গৃহীত ব্যবস্থাদি এবং প্রযুক্তি ব্যবহারের গুরুত্ব বিশ্লেষণ