বাক্য কাকে বলে? একটি সার্থক বাক্যের কী কী বৈশিষ্ট্য থাকে?
প্রিয় পাঠক আজকে আমরা জানবো বাংলা ২য় পত্রের একটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন সম্পর্কে । বাংলা ২য় পত্রের একটি খুব গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন হল বাক্য কাকে বলে ? বরাবর প্রায় প্রতিটি পরিক্ষায় আমরা এই প্রশ্নের সম্মুখীন হয়। এছাড়াও গুগলে এই প্রশ্নটি লিখে প্রচুর পরিমানে সার্চ হয়েছে। আমরা আজকে এই পোস্ট এর মাধ্যমে জানবো বাক্য কাকে বলে? একটি সার্থক বাক্যের কী কী বৈশিষ্ট্য থাকে? এবং বাক্য কত প্রকার ও কি কি। প্রিয় পাঠক তাহলে আর দেরি না করে সম্পূর্ণ পোস্টটি ভালভাবে পড়ুন তাহলে বাক্য কাকে বলে সঠিক ধারণা পেয়ে যাবেন।
বাক্য কাকে বলে?
বাক্য ভাষার প্রধান উপাদান। আর বাক্যের মৌলিক উপাদান হলো ‘শব্দ’। কয়েকটি শব্দ মিলিত হয়ে যদি একটি পূর্ণ মনের ভাব প্রকাশ করে, তাহলে তাকে বাক্য বলে। যেমন: আমি কলেজে যাই।
ভাষাবিদগণ বাক্যকে বিভিন্নভাবে সংজ্ঞায়িত করেছেন্-
ড. সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘যে পদ বা শব্দ-সমষ্টির দ্বারা কোন বিষয়ে বক্তার ভাব সম্পূর্ণরূপে প্রকটিত হয়, সেই পদ বা শব্দ সমষ্টিকে বাক্য বলে।’
সুনীলকুমার মুখোপাধ্যায় বলেছেন, ‘পরস্পর অর্থসম্বন্ধ বিশিষ্ট যে পদ গুলোর দ্বারা একটি সম্পূর্ণ ধারণা বা বক্তব্য বা ভাব প্রকাশ পায় সেই পদ গুলোর সমষ্টিকে বাক্য বলে।’
ভাষাবিদ্ জ্যোতিভূষণ চাকী বলেছেন, ‘যথাযথ বিন্যস্ত শব্দ-সমষ্টি যদি একটি সম্পূর্ণ মনোভাব প্রকাশ করে তাকে বাক্য বলে।’
আরও দেখুন:
- শব্দ কাকে বলে? কত প্রকার ও কি কি
- বল কাকে বলে? কত প্রকার ও কি কি?
- কোণ কাকে বলে? কত প্রকার ও কি কি?
- গতি কাকে বলে? কত প্রকার ও কি কি?
একটি সার্থক বাক্যের কী কী বৈশিষ্ট্য থাকে?
একটি সার্থক বাক্যের তিনটি বৈশিষ্ঠ্য থাকে।
(ক) আকাঙ্ক্ষা
(খ) আসক্তি
(গ) যোগ্যতা
(ক) আকাঙ্ক্ষা: বাক্যের অর্থ পরিপূর্ণভাবে বোঝার জন্যে এক শব্দের পর পরবর্তী শব্দসমূহ শোনার যে বাসনা, তাই আকাঙ্ক্ষা। আকাঙ্ক্ষা যতক্ষণ না মিটবে, ততক্ষণ বাক্য হবে না। যেমন; ‘আমি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা’ বললে আকাঙ্ক্ষা মিটে না, তাই বাক্য হয় না। কিন্তু ,যদি বলা হয়: ‘আমি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা দেব।’ তাহলে আকাঙ্ক্ষা মেটে, ফলে সার্থক বাক্য সৃষ্টি হয়।
খ) আসক্তি: বাক্যের শব্দগুলো এমনভাবে সাজাতে হবে, যাতে অর্থ প্রকাশে কোনোরূপ বিঘ্ন সৃষ্টি না হয়। বাক্যে এই ধরনের পদ বিন্যাসকে আসত্তি বলে। যেমন: ‘আমি পড়ি ফিউচার কমার্স কলেজে যাবৎ দুই বছর’ বললে আসত্তিহীনতার জন্যে বাক্য হবে না। আসত্তি রক্ষা করতে হলে বলতে হবে ‘আমি দুই বছর যাবৎ ফিউচার কমার্স কলেজে পড়ি।’
(গ) যোগ্যতা: বাক্যের শব্দসমূহের বাস্তবসম্মত অর্থসঙ্গতিকে যোগ্যতা বলে। যেমন: ‘ছাগলগুলো তাল গাছের পাতার উপর নাচছে’ বললে বাস্তবসম্মত কোনো অর্থ প্রকাশিত হয় না। কারণ এর যোগ্যতা নেই। যদি বলা হয়, ‘পাখিটি তাল গাছের পাতার উপর নাচছে’ তাহলে একটি যোগ্যতাসম্পন্ন বাক্য সৃষ্টি হয়।
বাক্য কত প্রকার ও কি কি
কয়েকটি শব্দ মিলিত হয়ে যদি একটি পূর্ণ মনের ভাব প্রকাশ করে, তাহলে তাকে বাক্য বলে। অর্থ অনুযায়ী বাক্য ২ প্রকার , গঠন অনুযায়ী বাক্য ৩ প্রকার এবং বর্ণনা অনুযায়ী বাক্য ৫ প্রকার।
অর্থ অনুযায়ী বাক্য দুই প্রকার।
১। অস্তিবাচক (Affirmative Sentence)
২। নেতিবাচক (Negative Sentence)
গঠন অনুসারে বাক্য তিন প্রকার।
১। সরল বাক্য (Simple Sentence)
২। জটিল বাক্য (Complex Sentence)
৩। যৌগিক বাক্য (Compound Sentence)
বর্ণনা অনুসারে বাক্য পাঁচ প্রকার।
১। বর্ণনামূলক বাক্য (Assertive Sentence)
২। প্রশ্নবাচক বাক্য (Interrogative Sentence)
৩। অনুজ্ঞামূলক বাক্য (Imperative Sentence)
৪। প্রার্থনাসূচক বাক্য (Optative sentence)
৫। আবেগসূচক বাক্য (Exclamatory Sentence)
গুরুত্বপূর্ণ সব প্রশ্নের উত্তর পেতে আমাদের ওয়েবসাইটের সাথেই থাকুন। এছাড়াও কোনো প্রশ্নের উত্তর জানতে চাইলে তা আমাদের কমেন্ট করে জানান।