বিজ্ঞান কাকে বলে? বিজ্ঞানের প্রধান শাখা কয়টি?
প্রিয় পাঠক আজকে আমরা আলোচনা করবো বিজ্ঞান নিয়ে । বর্তমান বিশ্ব এবং এর প্রগতি নিয়ন্ত্রিত হয় বিজ্ঞানের মাধ্যমে। তাই এর গুরুত্ব অপরিসীম। আমরা সবাই বিজ্ঞান কথাটার সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িত কিন্তু অনেকেই জানি না বিজ্ঞান কাকে বলে এবং এর শাখা সম্পর্কে । আজকে আমরা এই পোষ্টের মাধ্যমে জানবো বিজ্ঞান কাকে বলে? বিজ্ঞান এর শাখা সম্পর্কে। প্রিয় পাঠক তাহলে আর দেরি না করে সম্পূর্ণ পোস্টটি ভালভাবে পড়ুন তাহলে বিজ্ঞান সম্পর্কে সঠিক ধারণা পেয়ে যাবেন।
বিজ্ঞান কাকে বলে?
এক কথাই বিজ্ঞান অর্থ বিশেষ জ্ঞান। ভৌত বিশ্বের যা কিছু পর্যবেক্ষণযোগ্য, পরীক্ষণযোগ্য ও যাচাইযোগ্য, তার সুশৃঙ্খল, নিয়মতান্ত্রিক গবেষণা ও সেই গবেষণালব্ধ জ্ঞানভাণ্ডারের নাম বিজ্ঞান।
বিজ্ঞানের প্রথম কাজ পর্যবেক্ষণ করা, দ্বিতীয় কাজ তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করা এবং পরিশেষে সেই তথ্য-উপাত্তের ভিত্তিতে সমস্যার ব্যাখ্যা এবং সমাধান খোঁজা ।তার মানে, এককথায় বিজ্ঞানের কাজ হলো প্রকৃতি এবং জগৎ সম্পর্কিত কোনো প্রশ্নের উত্তর খোঁজা । বিজ্ঞানের ইংরেজি শব্দ Science মূলত ল্যাটিন Scientia থেকে এসেছে, যার মানে Knowledge অর্থাৎ জ্ঞান । সেদিক থেকে বিবেচনা করলে সকল জ্ঞানই (যেমন ইতিহাস, সাহিত্য, শিল্পকলা) বিজ্ঞান হওয়ার কথা । কিন্তু দুৰ্ভাগ্যজনকভাবে Scientia শব্দটির আক্ষরিক অর্থ অনুযায়ী বিজ্ঞান সেটা নয় ।
বিজ্ঞানীরা বিশেষ বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি অনুসরণ করে জ্ঞান অর্জন করেন এবং প্রকৃতি ও সমাজের নানা মৌলিক বিধি ও সাধারণ সত্য আবিষ্কারের চেষ্টা করেন।[২] বর্তমান বিশ্ব এবং এর প্রগতি নিয়ন্ত্রিত হয় বিজ্ঞানের মাধ্যমে। তাই এর গুরুত্ব অপরিসীম। ব্যাপক অর্থে যেকোনো জ্ঞানের পদ্ধতিগত বিশ্লেষণকে বিজ্ঞান বলা হলেও এখানে বিশেষায়িত ক্ষেত্রে শব্দটি ব্যবহার করা হবে।বিজ্ঞান চর্চার সূত্র সুদূর অতীত ৩০০০ থেকে ১২০০ বিসিই সময়কালে প্রাচীন মিশর এবং মেসোপটেমিয়ায় পাওয়া যায়।
আপনি পছন্দ করতে পারেন:
বিজ্ঞানের প্রধান শাখা কয়টি?
আমাদের একটি প্রচলিত প্রশ্ন হল, বিজ্ঞান কত প্রকার? আসলে বিজ্ঞানকে এমন ‘প্রকারে’ বিভক্ত করা যায় না। তবে বিজ্ঞানের বিভিন্ন শাখা রয়েছে। বিজ্ঞানের এ শাখাগুলোকে আবার বিভিন্ন ভাগে ভাগ করা যায়।বিজ্ঞানের তিনটি প্রধান শাখা রয়েছে। এগুলো হল-
১। প্রাকৃতিক বিজ্ঞান
২। সামাজিক বিজ্ঞান
৩। সাধারণ বিজ্ঞান
তবে সাধারণ বিজ্ঞান আদৌ বিজ্ঞানের কোন শাখা কি না তা নিয়ে কিছুটা মতভেদ আছে। প্রাকৃতিক বিজ্ঞান ও সামাজিক বিজ্ঞানকে গবেষণামূলক বিজ্ঞানও বলা হয়।
প্রাকৃতিক বিজ্ঞান
প্রাকৃতিক বিজ্ঞান মূলত প্রকৃতির গতিধারার বর্ণনা, ভবিষ্যদ্বাণী এবং ব্যাখ্যার জন্য গবেষণামূলক প্রমাণ নিয়ে কাজ করে। বিভিন্ন পরীক্ষা নিরীক্ষার মাধ্যমে এসকল গবেষণা মূলক প্রমাণ প্রস্তুত করা হয়। প্রাকৃতিক বিজ্ঞানকে প্রধানত দুটি ভাগে ভাগ করা যায়-
জীব বিজ্ঞানঃ জীববিজ্ঞান হল প্রাকৃতিক বিজ্ঞানের একটি শাখা যেখানে জীব ও জীবন সংক্রান্ত গবেষণা করা হয়। জীবের গঠন, বৃদ্ধি, বিবর্তন, শ্রেণীবিন্যাস-বিদ্যার আলোচনা বিজ্ঞানের এই শাখাটির অন্তর্ভুক্ত। জীববিজ্ঞানের বিভিন্ন শাখা রয়েছে। যেমনঃ প্রাণীবিজ্ঞান, উদ্ভিদবিজ্ঞান, প্রাণরসায়ন, আণবিক জীববিজ্ঞান, জীববিজ্ঞান প্রভৃতি।
ভৌত বিজ্ঞানঃ প্রাকৃতিক বিজ্ঞানের যে শাখায় বিভিন্ন তত্ত্বীয় বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হয় তাকে ভৌত বিজ্ঞান বলা হয়। তবে এসব তত্ত্বীয় বিষয় সমূহের বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও গাণিতিক হিসাব নিকাশের সাহায্যে সত্যতা প্রমাণ করা হয়। প্রাকৃতিক বিজ্ঞানের এ শাখাটিকে বিভিন্ন শ্রেণীতে ভাগ করা যায়। তবে মূলত ভৌত বিজ্ঞানকে পদার্থ, রসায়ন, জ্যোতির্বিদ্যা, ভূবিদ্যা ইত্যাদি প্রধান প্রধান শ্রেণীতে ভাগ করা যায়।
সামাজিক বিজ্ঞান
সামাজিক বিজ্ঞান বিজ্ঞানের এমন একটি শাখা যা সমাজ এবং সমাজস্থ একক ব্যক্তিকে নিয়ে গবেষণা করে। সামাজিক বিজ্ঞানী গন দার্শনিক তত্ত্বসমূহ ব্যক্তি এবং সমাজ গবেষণার সময় কাজে লাগাতে পারেন। সামাজিক বিজ্ঞানের শাখা বেশ প্রসারিত। এদের মধ্যে নৃবিজ্ঞান, প্রত্নতত্ত্ব, যোগাযোগ বিদ্যা, অর্থনীতি, ইতিহাস, মানবীয় ভূগোল, আইন, ভাষাবিজ্ঞান, রাষ্ট্রবিজ্ঞান, মনোবিজ্ঞান, জনস্বাস্থ্য, এবং সমাজবিজ্ঞান উল্লেখযোগ্য। এছাড়াও সামাজিক বিজ্ঞানের আরও কিছু শাখা রয়েছে।
সাধারণ বিজ্ঞান
বিজ্ঞানের যে শাখায় বিজ্ঞানের আদি মৌলিক বিষয় যেমন যুক্তি, গণিত ইত্যাদি নিয়ে আলোচনা করা হয় তাকে সাধারণ বিজ্ঞান বলে। সাধারণ বিজ্ঞানের শাখাগুলোর মধ্যে অন্যতম হল যুক্তি, গণিত, কম্পিউটার বিজ্ঞান এবং পরিসংখ্যান।
গুরুত্বপূর্ণ সব প্রশ্নের উত্তর পেতে আমাদের ওয়েবসাইটের সাথেই থাকুন। এছাড়াও কোনো প্রশ্নের উত্তর জানতে চাইলে তা আমাদের কমেন্ট করে জানান।
আরও পড়ুনঃ
- শ্বসন কাকে বলে ? শ্বসন এর প্রকারভেদ ।
- রেখা কাকে বলে?কত প্রকার ও কি কি?
- পদার্থ কাকে বলে ?কত প্রকার ও কি কি?