তরঙ্গ কাকে বলে
তরঙ্গ কাকে বলে
তরঙ্গ বা ঢেউ হলো এক ধরনের পর্যাবৃত্ত আন্দোলন যা কোন জড় মাধ্যমের এক স্থান থেকে অন্য স্থানে শক্তিবল সঞ্চারিত করে কিন্তু মাধ্যমের কণাগুলো নিজ নিজ স্থান থেকে স্থানান্তরিত হয় না। কিছু কিছু তরঙ্গ শূণ্য মাধ্যম দিয়েও (অর্থাৎ কোন মাধ্যম ছাড়াই) সঞ্চারিত হতে পারে। এ ধরনের তরঙ্গ হলো তাড়িতচ্চৌম্বক তরঙ্গ এবং মহাকর্ষীয় তরঙ্গ। জড় মাধ্যমের কণার আন্দোলনের ফলে যে তরঙ্গ সৃষ্টি হয় তাকে যান্ত্রিক তরঙ্গ বলে। এই তরঙ্গ মাধ্যমের কণার কোন স্থায়ী বিচ্যুতি ঘটায় না, বরং এই তরঙ্গ মাধ্যমের কণাগুলোর স্পন্দন বা কম্পন দ্বারা সঞ্চালিত হয়।সুতরাং যান্ত্রিক তরঙ্গের সঞ্চালনের জন্য মাধ্যমটি স্থিতিস্থাপক এবং অবিচ্ছিন্ন হওয়া প্রয়োজন।
তরঙ্গ সংজ্ঞা
কোনো স্থিতিস্থাপক কণাগুলো সমষ্টিগত কম্পনের ফলে তৈরি শব্দের যে আলোড়ন কণাগলোকে স্থানচ্যুত না করে একস্থান থেকে অন্যস্থানে শক্তি সঞালিত করে তাকে তরঙ্গ বলে ।
তরঙ্গের বৈশিষ্ট্য
- পানিতে ঝাঁপ দিলে পানির উপরিতলে তরঙ্গ সৃষ্টি হয়
- তরঙ্গের মধ্যে যে বৈশিষ্ট্যগুলো থাকে তা হলোঃ[২]
- তরঙ্গের সৃষ্টি হয় মাধ্যমের কণার স্পন্দন বা কম্পনের ফলে। কিন্তু এর প্রভাবে মাধ্যমের কণা স্থানান্তরিত হয় না শুধুমাত্র মাধ্যমের ভিতর দিয়ে তরঙ্গাকারে আন্দোলন সঞ্চারিত হয়।
- তরঙ্গের বেগ ও মাধ্যমের কণাগুলোর স্পন্দনের বেগ আলাদা। মাধ্যমের সব জায়গায় তরঙ্গের বেগ একই থাকে কিন্তু মাধ্যমের কণাগুলো বিভিন্ন বেগে স্পন্দিত হয়। সাম্যাবস্থানে কণাগুলোর বেগ সবচেয়ে বেশি।
- সব তরঙ্গই শক্তি ও তথ্য সঞ্চারণ করে।
- তরঙ্গের বিস্তার,কম্পন, তরঙ্গদৈর্ঘ্য আছে।
- তরঙ্গ অগ্রগামী বা স্থির হতে পারে।
- তরঙ্গ আড় বা লম্বিক অর্থাৎ অনুপ্রস্থ বা অনুদৈর্ঘ্য বরাবর হতে পারে।
- এর প্রতিফলন, প্রতিসরণ,ব্যতিচার,অপবর্তন ঘটে।
- তরঙ্গের প্রবাহের অভিমুখ বা দিক আছে।
তরঙ্গের প্রকারভেদ
সরল ছন্দিত তরঙ্গ তরঙ্গশীর্ষ বা চূড়া এবং তরঙ্গপাদ বা তল দ্বারা বৈশিষ্টায়িত। এই তরঙ্গ সাধারণত দুই ধরনের, অনুপ্রস্থ তরঙ্গ ও অনুদৈর্ঘ্য তরঙ্গ।
যে তরঙ্গের সঞ্চালনের দিক মাধ্যমের কণাগুলোর স্পন্দনের দিকের সাথে সমকোণে থাকে তাকে অনুপ্রস্থ তরঙ্গ বলা হয়। যেমন তাড়িতচৌম্বকীয় তরঙ্গ বা সুতার মধ্যে দিয়ে সঞ্চারিত তরঙ্গ।
অন্যদিকে অনুদৈর্ঘ্য তরঙ্গে তরঙ্গ সঞ্চালনের দিক মাধ্যমের কণাগুলোর স্পন্দনের দিকের সাথে সমান্তরালে থাকে। এর উদাহরণ হলো শব্দ তরঙ্গ।