মনে কর তুমি ৭ম শ্রেণির একজন শিক্ষার্থী। নিয়মিত মসজিদে গিয়ে জামা’আতের সাথে পাঁচ ওয়াক্ত সালাত আদায় কর
প্রিয় শিক্ষার্থী, তোমরা কি ৭ম শ্রেণির ৭ম সপ্তাহের ইসলাম ও নৈতিক শিক্ষা এসাইনমেন্টের উত্তর জানতে চাচ্ছো? বা এসাইনমেন্টটি কিভাবে প্রস্তুত করবে সে সম্পর্কে জানতে আগ্রহী? তাহলে আর দেরি না করে পুরো পোস্টটি ভালভাবে পড়। তোমাদের জন্য আজকের আর্টিকেলটিতে রয়েছে-মাসবুক, মুসাফির, অসুস্থ অবস্থায় সালাত আদায়ের বর্ণনা।
সপ্তম শ্রেণীতে অধ্যয়নরত যে সকল শিক্ষার্থী ইসলাম ধর্মাবলম্বী তাদের জন্য সপ্তাহের অ্যাসাইনমেন্ট ইসলাম ধর্ম ও নৈতিক শিক্ষা বিষয়ের দ্বিতীয় অধ্যায় থেকে নির্ধারণ করা হয়েছে। সালাত, বিভিন্ন প্রকার সালাত, ও ঈদের সালাত সংক্রান্ত অধ্যায়ন শিক্ষার্থীরা সপ্তম সপ্তম শ্রেণীর ইসলাম ও নৈতিক শিক্ষা বিষয়ের অ্যাসাইনমেন্ট লিখবে।
৭ম শ্রেণির ৭ম সপ্তাহের ইসলাম ও নৈতিক শিক্ষা এসাইনমেন্ট
আপনি পছন্দ করতে পারেন-
- ৬ষ্ঠ শ্রেণির ৬ষ্ঠ সপ্তাহের অ্যাসাইনমেন্ট গার্হস্থ্য বিজ্ঞান এর উত্তর সমাধান
- ৯ম শ্রেণি ৬ষ্ঠ সপ্তাহের এ্যাসাইনমেন্ট ২০২৪ আইসিটি, পদার্থ, ইতিহাস ও হিসাব বিজ্ঞান
এ্যাসাইনমেন্ট বা নির্ধারিত কাজের ক্রম : এ্যাসাইনমেন্ট বা নির্ধারিত কাজ-২
অধ্যায় ও অধ্যায়ের শিরােনাম : দ্বিতীয় অধ্যায়, পাঠ্যসূচিতে অন্তর্ভুক্ত পাঠ নম্বর ও বিষয়বস্তু: পাঠ-১: সালাত পাঠ-২: বিভিন্ন প্রকারের সালাত, পাঠ-৩: ঈদের সালাত;
এ্যাসাইনমেন্ট বা নির্ধারিত কাজঃ মনে কর তুমি ৭ম শ্রেণির একজন শিক্ষার্থী। নিয়মিত মসজিদে গিয়ে জামা’আতের সাথে পাঁচ ওয়াক্ত সালাত আদায় কর। নিচে বর্ণিত অবস্থাগুলাের ক্ষেত্রে তুমি কীভাবে সালাত আদায় করবে বর্ণনা দাও- যেকোনাে ৩টি বিষয়ের বর্ণনা লেখ : ১। কোভিড-১৯ পরিস্থিতিতে (স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে) ২। সালাতে এক বা দু’রাকাত মাসবুক হলে। ৩। মুসাফির অবস্থায় মাগরিব, এশা ও ফজরের সালাত। ৪। অসুস্থ অবস্থায় সালাত (যখন তুমি দাঁড়াতে বা বসতে পার না)।
নির্দেশনাঃ পাঠ্যবইয়ের অধ্যায় দুইয়ের সংশ্লিষ্ট পাঠের আলােকে বিষয়বস্তুর মৌলিক চাহিদাগুলাে শনাক্ত করতে হবে। প্রয়ােজনে সহায়ক পুস্তকের সাহায্য নেওয়া যেতে পারে।
পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের সাথে আলােচনা করে বিষয়ের সঠিকতা সম্পর্কে সম্যক ধারণা নেওয়া যেতে পারে। কোনাে তথ্য উৎস থেকে অবিকল (হুবহু) কোনাে তথ্য লিখে অ্যাসাইনমেন্ট জমা দেওয়া যাবে না। অ্যাসাইনমেন্ট অবশ্যই নিজ হাতে লিখে জমা দিতে হবে।
৭ম শ্রেণির ৭ম সপ্তাহের ইসলাম ও নৈতিক শিক্ষা এসাইনমেন্টের উত্তর
আমি সপ্তম শ্রেণীর একজন শিক্ষার্থী। নিয়মিত মসজিদে গিয়ে জামাতের সাথে পাঁচ ওয়াক্ত সালাত আদায় করি। নিচে বর্ণিত অবস্থাগুলোর ক্ষেত্রে আমি যেভাবে সালাত আদায় করব তার বর্ণনা দেওয়া হল।
সালাতে এক বা দুই রাকাত মাসবুক হলে :
যে ব্যক্তি নামাজে এক বা একাধিক রাকাত শেষ হওয়ার পর ইমামের সাথে জামাতে অংশগ্রহণ করে তাকে মাসবুক বলে।
মুসল্লী জামা’আতে সালাত আদায় করতে গিয়ে ইমামকে যে অবস্থায় পাবে সে অবস্থাতেই নিয়ত করে নামায অংশগ্রহণ করবে। তারপর ইমামের সাথে যথারীতি রুকু, সিজদাহ করে তাশাহহুদ এর জন্য বসে যাবে। ইমাম সালাম ফিরালে সে মুসল্লী সালাম না ফিরিয়ে দাঁড়িয়ে যাবে এবং ছুটে যাওয়া রাকাআতগুলো রুকু, সিজদাহ করে যথারীতি তাশাহহুদ, দুরুদ, দোয়া মাসূরা পড়ে সালাম এর মাধ্যমে সালাত শেষ করবে। রুকুসহ ইমামের সাথে যে কয় রাকাত পাওয়া যায় তা আদায় হয়ে যায়। রুকুর পর ইমামের পিছনে ইক্তেদা বা নামাজে দাঁড়ালে ওই রাকাত মাসবুককে আদায় করতে হবে।
দুই রাকাত নামাজ ছুটে গেলে ইমামের সালাম ফেরানোর পর মুক্তাদি দাঁড়িয়ে যাবে এবং ছুটে যাওয়া দুই রাকাত যথানিয়মে আদায় করবে, যেভাবে ফজরের দুই রাকাত ফরজ সালাত একাকী আদায় করতে হয়।
মুসাফির অবস্থায় মাগরিব, এশা ও ফজরের সালাত :
মুসাফির আরবী শব্দ এর অর্থ ভ্রমণকারী কমপক্ষে ৪৮ মাইল দূরবর্তী কোনো স্থানে যাওয়ার নিয়তে কোন ব্যক্তি বাড়ি থেকে বের হলে শরীয়তের পরিভাষায় তাকে মুসাফির বলে। এমন ব্যক্তি এমন ব্যক্তি গন্তব্যস্থলে পৌঁছে কমপক্ষে ১৫ দিন অবস্থানের নিয়ত না করা পর্যন্ত তার জন্য মুসাফিরের হুকুম প্রযোজ্য হবে।
শরীয়তে মুসাফিরকে সংক্ষিপ্ত আকারে সালাত আদায়ের সুযোগ দেওয়া হয়েছে। এই সংক্ষিপ্তকরণকে আরবিতে কসর বলা হয়। মুসাফির অবস্থায় যোহর, আসর ও এশার ফরজ সালাত কসর করে পড়তে হয়।
মুসাফিরের জন্য কসর সালাত আদায় করার অনুমতি আল্লাহ তায়ালার এক বিশেষ অনুগ্রহ। এই অনুগ্রহের গুরুত্ব সম্পর্কে মহানবী (স.) বলেন :
“এটি একটি সাদাকা, যা আল্লাহ তা’আলা তোমাদের (মুসাফিরদের) দান করেছেন। এ সাদাকা তোমরা গ্রহণ করো।” (বুখারী ও মুসলিম)
চার রাকাত বিশিষ্ট অর্থাৎ যোহর, আসর ও এশার ফরজ সালাত মুসাফির ব্যক্তি দুই রাকাত করে আদায় করবে। ফজর, মাগরিব ও বিতরের নামাজে কসর নেই। এগুলো পুরোপুরি আদায় করতে হবে। আল্লাহর দেওয়া সকল সুযোগ-সুবিধা খুশিমনে গ্রহণ করা উচিত। কাজেই কোনো মুসাফির ব্যক্তি যদি ইচ্ছে করে জোহর, আসর বা এশার ফরজ সালাত চার রাকাত আদায় করে, তবে আল্লাহর দেওয়া সুযোগ গ্রহণ না করায় গুনাহগার হবে। কিন্তু ইমাম যদি মুকিম (স্থায়ী) হয়, তাহলে সে ইমামের অনুসরণ করে পূর্ণ সালাত আদায় করবে। সফর একটি কষ্টকর বিষয়। তাই আল্লাহ তাঁর বান্দার উপর সালাত সংক্ষিপ্ত করার অনুমতি প্রদান করেছেন।
অসুস্থ অবস্থায় সালাত (যখন আমি দাঁড়াতে বা বসতে পারি না) :
রোগী বা অক্ষম ব্যক্তির যথানিয়মে সালাত আদায় করতে না পারলে, তার জন্য ইসলামে সহজ নিয়ম এর অনুমোদন রয়েছে। রোগীর সেই সহজ নিয়মে সালাত আদায়কে রুগ্ন ব্যক্তির সালাত বলে।
রুগ্ন ব্যক্তির জন্য জ্ঞান থাকা পর্যন্ত সালাত আদায় করা বাধ্যতামূলক। যত কঠিন রোগ হোক না কেন, সম্পূর্ণরূপে অপারগ না হলে সালাত ত্যাগ করা যাবে না। রোগীর দাঁড়াতে কষ্ট হলে বসে রুকু-সিজদাহর সাথে সালাত আদায় করবে। রুকু-সিজদাহ করতে অক্ষম হলে বসে ইশারায় সালাত আদায় করবে। ইশারা করার সময় রুকু অপেক্ষা সিজদায় মাথা একটু বেশি নত করতে হবে। মাথা দিয়ে ইশারা করতে হবে, চোখে ইশারা করলে সালাত আদায় হবে না। রুগ্ন ব্যক্তি কে বসার সময় সালাতের অবস্থায় বসতে হবে।
যদি রোগী এতই দুর্বল হয় যে বসে থাকা সম্ভব নয়, তবে কিবলার দিকে পা দুটি রাখতে হবে। পা সোজা রেখে হাটু উঁচু করে রাখতে হবে এবং মাথার নিচে বালিশ অথবা এ জাতীয় কিছু জিনিস রেখে মাথা একটু উঁচু রাখতে হবে। শুয়ে ইশারায় রুকু সিজদা করবে অথবা উত্তর দিকে মাথা রেখে কাত হয়ে শুয়ে এবং কিবলার দিকে মুখ রেখে ইশারায় সালাত আদায় করবে। যদি এভাবে ও সালাত আদায় করা সম্ভব না হয়, তবে তার উপর সালাত আর ফরজ থাকেনা মাফ হয়ে যায়। অপারগ অবস্থায় বা কেউ বেহুশ হয়ে পড়লে যদি ২৪ ঘন্টা সময় অর্থাৎ পাঁচ ওয়াক্ত সালাতের বা তার চেয়ে কম সময় অতিক্রান্ত হয়, তাহলে সক্ষম হওয়ার পর রুগ্ন ব্যক্তি কে কাযা করতে হবে। যদি পাঁচ ওয়াক্তের বেশি সময় অতিবাহিত হয়, তবে আর কাযা করতে হবে না। এতে একথা প্রতীয়মান হয় যে, সালাত এমন একটি ইবাদত, যা সক্ষমতার শেষ সীমা পর্যন্ত আদায়ের হুকুম দেয়া হয়েছে। কোনভাবেই সালাত ত্যাগ করা যাবে না।
এই ছিল তোমাদের ৭ম শ্রেণির ৭ম সপ্তাহের ইসলাম ও নৈতিক শিক্ষা এসাইনমেন্টের উত্তর- মাসবুক, মুসাফির, অসুস্থ অবস্থায় সালাত আদায়ের বর্ণনা।
আরো দেখুন-
এসএসসি পরীক্ষা ২০২২ এর দশম শ্রেণি ১ম সপ্তাহের অ্যাসাইনমেন্ট প্রকাশ
৬ষ্ঠ শ্রেণির ৬ষ্ঠ সপ্তাহের অ্যাসাইনমেন্ট গার্হস্থ্য বিজ্ঞান