গুগল এডসেন্সে ফেক বা ইনভ্যালিড ক্লিক এক্টিভিটি থেকে বাঁচার উপায়
প্রিয় পাঠক আপনার ইউটিউব চ্যানেলে এডে ফেক ক্লিক পড়ছে? ওয়েবসাইট বা ব্লগের এডসেন্সে এডে ফেক ক্লিক পড়ছে? আপনি কি গুগল এডসেন্সের অবৈধ্য বা ইনভ্যালিড ক্লিক এক্টিভিটির বিস্তারিত জানতে চান? তাহলে আজকের এই পোস্টটি আপনার জন্যই । প্রিয় পাঠক তাহলে আর দেরি না করে সম্পূর্ণ পোস্টটি ভালভাবে পড়ুন তাহলে সঠিক ধারণা পেয়ে যাবেন।
আমরা সবাই জানি, গুগোল এডসেন্স বর্তমান সময়ে অনলাইনের মাধ্যমে বিভিন্ন পদ্ধতিতে ইনকাম করার একটি গুরুত্বপূর্ণ এবং পাশাপাশি অনেক জনপ্রিয় একটি মাধ্যম হয়ে দাঁড়িয়েছে। অন্যদিকে আমরা প্রায় কমবেশি সবাই গুগল এডসেন্স এর নাম শুনে থাকি।
এমনকি আপনাদের সুবিধার্থে একটি মজার ঘটনা বলি, আসলে মজা ঠিক না বলতে পারেন এটা আমাদের জন্য অনেকটা কষ্টের। কারণ নিজের হাতে গড়ে তোলা একটি ওয়েবসাইট যখন ব্যান হয়ে যায় তখন সেটা আসলেই বেদনার। হ্যাঁ,আপনারা ঠিকই শুনছেন। আমাদের এই ordinaryIT ওয়েবসাইটের আগে আরো একটি ওয়েবসাইট ছিল যার নাম banglacourse.com. কিন্তু হঠাৎ একদিন কিছু ইনভ্যালিড ক্লিক এক্টিভিটির জন্য আমাদের ওয়েবসাইটটির এডসেন্স একাউন্ট গুগোল একেবারের জন্য ডিজেবল করে দেয়। এখন প্রশ্ন হলো কি কি এ্যাকটিভিটির কারণে এডসেন্স একাউন্ট ডিজেবল হয়ে যায়?
পরবর্তীতে কিভাবে আমরা আমাদের একাউন্টটিকে উদ্ধার করেছিলাম বা আদৌ উদ্ধার করা যায় কিনা অথবা নতুন করে যদি আবার অ্যাকাউন্ট শুরু করতে চাই তাহলে আমাদেরকে কি কি পদ্ধতি অবলম্বন করতে হবে সেটা জেনে রাখা অনেক গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। আমাদের আজকের পোস্টটি আপনাদের এই সমস্ত বিষয় গুলো জানানোর জন্যই তৈরি করা, যাতে আপনারা আপনাদের প্রিয় গুগল এডসেন্স একাউন্ট ডিজেবল হওয়ার হাত থেকে রক্ষা করতে পারেন।
১. ইনভ্যালিড ক্লিক এর জন্য কিভাবে ওয়েবসাইটে অ্যাডসেন্স একাউন্ট ডিজেবল হয়ে যায়?
২. জেনুইন ক্লিক এবং ইনভেলিড ক্লিক কি? শুধুমাত্র ইনভ্যালিড ক্লিক-ই কি একাউন্ট ব্যান হওয়ার জন্য দায়ী?
৩. ক্লিক প্রতিদিন কত শতাংশ বেশি হয়ে গেলে একাউন্টের সমস্যা হতে পারে?
৪. গুগল এডসেন্স সম্পর্কিত যাবতীয় তথ্যাদি।
তাহলে চলুন দেরী না করে জেনে নেই কিভাবে গুগল এডসেন্স এর ইনভ্যালিড ক্লিক কে প্রতিরোধ করে নিজের ওয়েবসাইট কে সুরক্ষিত করে রাখা যায়। সেটা ওয়ার্ডপ্রেসের ই হোক আর ব্লগেরই হোক।
আমার পূর্বের ওয়েবসাইটের গল্প
বিস্তারিত প্রসঙ্গে যাওয়ার আগে আপনাদের আমি আমার নিজস্ব ওয়েবসাইট এর এডসেন্স একাউন্ট ব্যান হওয়ার ঘটনা এবং পরবর্তীতে কি হয়েছিল সেই ঘটনাটি জানাতে চাই। সেই ওয়েবসাইটটি চালু করার পরে দীর্ঘ দুই বছর ধরে অনেক কঠোর পরিশ্রম এবং সাধনার পর ওয়েবসাইট থেকে একটা ভালো পজিশনে দাঁড় করাতে পেরেছিলাম। এর পরবর্তীতে হঠাৎ একদিন অ্যাকাউন্টটি ব্যান হয়ে যাওয়া দেখে আসলেই খুব কষ্ট পেয়েছিলাম। ওরে যে বুঝতে বেশি ইনভ্যালিড ক্লিক এ্যাকটিভিটির কারণে গুগোল কর্তৃপক্ষ আমার এই একাউন্টের এডসেন্স ব্যান করে দেয়।
এর পরবর্তীতে একদিন দেখতে পেলাম আমাদের সেই পুরনো ওয়েবসাইটটিকে অন্য কেউ একজন কিনে নিয়েছে এবং সে সেখানে স্বাভাবিকভাবেই অ্যাক্টিভিটি চালিয়ে যাচ্ছে। পরবর্তীতে কে আমাদের এই অ্যাকাউন্টটি কিনেছে বা মালিকানার সন্ধান করতে যে বুঝতে পারলাম অ্যাকাউন্টটি এক বাংলাদেশী ব্যাক্তি কিনেছেন। এমনকি সেখানে আমাদের ডিজাইন করা বেশ কিছু আর্কাইভ ও রয়েছে যা 2018 সালের তৈরি। পরবর্তীতে ওয়েবসাইটের রেজিস্ট্রেশন এবং ইনফরমেশন চেক করে দেখার পর সেখান থেকে আমরা মালিকের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করি এবং তাকে ফোন দিয়ে জিজ্ঞেস করি যে তার এই ওয়েবসাইটটি চালানোর মূল উদ্দেশ্য কি? তিনি স্বাভাবিক গুগোল এডসেন্স এর ইনকাম করা।
অতঃপর তাকে আমি বিষয়টি জানায় যে আপনার এডসেন্স তো আগে থেকে ব্যান হয়ে আছে এবং এই ওয়েবসাইটের মালিক পূর্বে আমরা ছিল… তাই আপনি চাইলেও এখান থেকে কোন ইনকাম করতে পারবেন না। তিনি তখন আমাদের কথা বিশ্বাস না করলেও পরবর্তীতে যখন এডসেন্স এর জন্য এপ্লাই করেন তখন তিনি বুঝতে পারেন যে তিনি আসলেই সেখান থেকে কোন ইনকাম করতে পারবেন না। ফলে তার ওয়েবসাইট টি এখন সম্পুর্ন ব্ল্যাংক অবস্থায় পড়ে আছে।
কি কারনে আমার পূর্বের ওয়েবসাইটের অ্যাডসেন্স ডিজেবল হয়ে গেল?
তাহলে ঘটনাটা প্রথম থেকেই শুরু করি, তখন আমাদের ওয়েবসাইট টি মোটামুটি ভাবে নতুন বলা যায়। তখন আমরা একটা পোস্ট করেছিলাম। পোস্ট টি ছিল বিকাশ অ্যাপ ডাউনলোড সংশ্লিষ্ট বিষয় নিয়ে। আমরা যখন এই পোস্টটি আমাদের ওয়েবসাইটে পাবলিশ করি তখন মার্কেটে বিকাশ অ্যাপ প্রথম লঞ্চ হয় এবং সেই অ্যাপটির নিয়ে জনগণের মধ্যে গুগলে সার্চ করার প্রবণতা ছিল সবচেয়ে বেশি।
অন্যদিকে আমাদের ওয়েবসাইট কর্তৃক প্রকাশিত আর্টিকেলটি ছিল র্যাংকে সবার উপরে। তাই কেউ বিকাশ অ্যাপ ডাউনলোড করার জন্য সার্চ দিলে সবার প্রথমে আমাদের আর্টিকেলটি আসত এবং আমাদের পোস্টের শুরুতেই তারা বিকাশ অ্যাপ ডাউনলোড করার জন্য অ্যাডটি দেখতে পেত এবং সেখান থেকেই ডাউনলোড করতো। কেননা তখন গুগোলে বা প্লে স্টোরে বিকাশ অ্যাপ ডাউনলোডের লিংক পেতোনা এভেলেবেল ছিল না।
এর ফলে আমাদের ওয়েবসাইটে অনেক ভিজিট হয়ে যেত। সসরাসরি আমাদের এড এ ক্লিক তারা বিকাশ অ্যাপ ডাউনলোড করায়, আমাদের ওয়েবসাইটের এডসেন্সের CTR এর পরিমাণ বেড়ে যেতে লাগলো। ভালোভাবে খেয়াল করে দেখা গেল, আমার একাউন্টে বিডিআর এর পরিমান একদিনে ২০ পার্সেন্ট থেকে ৩০ পারসেন্ট পর্যন্ত বাড়তে লাগলো। যেটি একটি স্বাভাবিক আইডির জন্য হুমকিস্বরূপ।
আপনাদের অনেকেই জানেন আবার অনেকেই হয়তো জানেন না যে, CTR এর পরিমান ১০ শতাংশের বেশি হয়ে গেলে সেটিকে গুগোল নোট করতে থাকে এবং পরবর্তীতে যেকোন সময়ে একাউন্ট ডিজেবল এর কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে। পরবর্তীতে কারণ বিশ্লেষণ করে দেখতে পেলাম যে আমার এডসেন্স একাউন্টে ইনভেলিড ক্লিক বা জেনুইন ক্লিক এর থেকে অ্যাড ভিউ এর মাধ্যমে CTR এর পরিমাণ বেশি বেড়ে যাচ্ছিল।
এর পরবর্তীতে তিন সপ্তাহ একই রকমভাবে সিটিআর চলার পরে একদিন গুগল থেকে একটা মেইল আসে আমার কাছে। সেই মেইলের মাধ্যমে আমি দেখতে পাই আমার এডসেন্স একাউন্ট ডিজেবল করা দাওয়া হয়েছে কারণ ছিল ইনভেলিড ক্লিক। যদিওবা আমার একাউন্টে কোন ইনভেলিড ক্লিক ছিলনা যা ছিল সব কিছুই জেনুইন বা সাধারণ ভাবে ক্লিক করা।
তাহলে এখান থেকে বোঝা যাচ্ছে যে শুধুমাত্র ইনভেলিড ক্লিক ইজ এ গুগল এডসেন্স ডিজেবল এর জন্য একমাত্র দায়ী তা কিন্তু নয়। আপনার জেনুইন ক্লিক যদি বেশি পরিমাণ হয়ে যায় তাহলেও কিন্তু গুগোল আপনার একাউন্ট থেকে ডিজেবল করে দিতে পারে।
গুগল এডসেন্সের ইনভ্যালিড অ্যাক্টিভিটি থেকে বাঁচার জন্য আমি কি কি স্টেপ নিয়েছিলাম? আদৌ কি কোন উপায় আছে?
ইনভ্যালিড অ্যাক্টিভিটি থেকে বাঁচার জন্য গুগলের একটি নির্দিষ্ট আপিল ফ্রম রয়েছে। আমি সেই ফরমটি পূরণ করে জমা দিয়েছিলাম, আমার অ্যাডসেন্স ব্যান হওয়ার পূর্বেই। কেননা এটা তাদেরকে জানানোর প্রয়োজন ছিল জন্য যে, “আমার ওয়েবসাইটের ক্লিক অ্যাক্টিভিটি বেশি হচ্ছে কিন্তু সেগুলো কোন ইনভেলিড ক্লিক নয় বরং সেগুলো জেনুইন।” এর বিপরীত রেসপন্স করেনি। বরং ৩ সপ্তাহ পর অ্যাকাউন্ট অ্যাকাউন্ট থেকে সরাসরি ডিজেবল করে দেয়।
এরপর আমি তাদেরকে জানাই আমার ক্লিক সঠিক থাকা সত্ত্বেও আমার অ্যাডসেন্স অ্যাকাউন্ট টি ব্যান করে দেওয়া হয়েছে,আমি চাচ্ছিলাম যাতে করে অ্যাকাউন্টটি আবার পুনরায় ফেরত পাই। কিন্তু এর পরিপ্রেক্ষিতে তারা আমাকে জানায়, ব্যান হওয়া একাউন্টটি ফেরত পাওয়া সম্ভব নয়।
গুগোল অ্যাডসেন্স একাউন্ট একবার ব্যান হলে তা আবার খোলা যায় কিনা?
আপনি যদি গুগলের দিক থেকে উত্তর খুঁজতে যান তবে অবশ্যই উত্তর হবে সম্ভব নয়। কিন্তু স্বাভাবিকভাবে আপনি সম্পূর্ণ নতুন ই-মেইল, নতুন ইনফর্মেশন দিয়ে আপনি চাইলে আবার নতুন করে একটি গুগল এডসেন্স একাউন্ট খুলতে পারবেন। তবে ব্যাংক একাউন্ট এড করার ক্ষেত্রে নতুন কোনো অ্যাকাউন্ট এর প্রয়োজন নেই। আপনি চাইলে আপনার পূর্ববর্তী ব্যাংক একাউন্ট দিয়েই গুগল এডসেন্স এর নতুন একটি একাউন্ট খুলতে পারবেন।
বলা বাহুল্য এর সাথে যদি আপনার অন্য কোন ইউটিউব চ্যানেল একই সাথে লিংক করা থাকে তবে আপনার সেই ইউটিউব চ্যানেলটি ও কিন্তু একই সাথে ব্যান হয়ে যাবে। তাই এইসব বিষয়গুলোতে একটু বেশি সতর্ক থাকা প্রয়োজন। না হলে এটি আপনার ইনকাম এর একমাত্র পথ হয়ে থাকলে সেটিও বন্ধ হয়ে যেতে পারে।
CTR কতদিন ধরে বেশি হতে থাকলে তা একাউন্টের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে? সিটিআর কিভাবে বৃদ্ধি পায়?
আপনি হঠাৎ একদিন সকালে উঠে দেখছেন যে আপনার অ্যাকাউন্টের সিটিআর হঠাৎ করেই ২০ (বিশ) পার্সেন্ট হয়ে গেছে। তাহলে কি এটি আপনার অ্যাকাউন্টের জন্য ক্ষতিকর? আসলে ব্যাপারটা সেরকম নয় একদিনের মধ্যে যদি আপনার ক্লিক ওঠানামা করে তাহলে এটি কোন সমস্যা করবে না।
তাহলে বিষয় হল সমস্যা কখন করবে? সমস্যা তখনই করবেন যখন আপনার সিটিআর এক সপ্তাহ পার হয়ে যাবার পরেও 20% থেকে নামছে না বা কোন ভাবেই কমছে না। মূল সমস্যাটা হবে তখনই। তখন আপনাকে ভালোভাবে খেয়াল করে দেখতে হবে কোন পোস্ট গুলোর কারণে মূলত আপনার অ্যাকাউন্টের সমস্যা হচ্ছে। অর্থাৎ কোন পোষ্ট গুলোতে আপনার ভিউ বেশি হচ্ছে আর কোন পোস্ট গুলোতে আপনার ভিউ কম হচ্ছে।
অর্থাৎ, তখন আপনার বেশি সিটিআর যুক্ত পোস্টগুলোকে যাচাই করে দেখতে হবে সেগুলোতে কোন ইনভেলিড ক্লিক আছে কিনা। আপনার চার্জ কন্ট্রোলার ডাটা চেক করে দেখলেই আপনি বুঝতে পারবেন আপনার কোন পোস্টে কি পরিমাণ ভিউ হচ্ছে।
চেক করার পরবর্তীতে আপনি যদি দেখেন আপনার কোন পোস্ট তেমন একটা ভাইরাল হয়নি কিন্তু তবুও আপনার ইনভ্যালিড ক্রিকেট সংখ্যা বেড়ে যাচ্ছে তখন আপনাকে বুঝতে হবে আপনার ওয়েবসাইটের পোস্ট গুলোতে কেউ শত্রুতাবশত এসে বারবার ক্লিক করছে। তখন আপনাকে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
কিভাবে গুগল এডসেন্স একাউন্ট কে সুরক্ষিত রাখতে ইনভ্যালিড ক্লিক প্রতিরোধ করা যায়?
আপনারা যারা ওয়ার্ডপ্রেস ওয়েবসাইট ব্যবহার করেন তাদের ওয়ার্ডপ্রেসের দে একটু ভালো করে লক্ষ্য করলে দেখবেন ইনভ্যালিড কি প্রতিহত করার জন্য বিভিন্ন ধরনের প্লাগিন অটোমেটিক ভাবে দেওয়া থাকে। আমি অসংখ্য প্লাগিন দেওয়া আছে যেগুলো ব্যবহার করে আপনি আপনার ল্যাপটপ বা ডেস্কটপ থেকে বিভিন্ন ধরনের ইনভ্যালিড ক্লিক কে প্রতিহত করতে পারবেন।
তবে এখানে একটা সমস্যা রয়েছে যে এই প্লাগইনগুলো শুধুমাত্র কম্পিউটার বা ল্যাপটপ থেকে আসা বিভিন্ন ইনভ্যালিড লীগকে প্রতিহত করতে পারে মোবাইল দ্বারা সৃষ্ট ক্লিক গুলোকে এটি প্রতিহত করতে পারে না। কেননা এই সিস্টেমে ব্যবহৃত প্লাগিন মোবাইলের টাচ গুলোকে ধরতে সক্ষম হয় না। কিন্তু ল্যাপটপ বা ডেস্কটপ থেকে আসা ক্লিক গুলোকে আইডেন্টিফাই করতে সক্ষম।
তাই আপনি এইধরনের প্লাগিন গুলোকে ব্যবহার করে খুব সহজেই ডেক্সটপ থেকে আসা ইনভেলিড ক্লিক গুলোকে প্রতিহত করতে পারবেন। তবে এসব ক্ষেত্রে third-party প্লাগিন ব্যবহার না করাই ভালো। কেননা third-party প্লাগিন ব্যবহার করার ক্ষেত্রে অনেক সময় নিজের একাউন্ট এর পাশাপাশি কম্পিউটারেরও সিকিউরিটির প্রবলেম হতে পারে। আবার অনেক সময় ওয়েবসাইট ঠিকঠাক কাজ করতে পারে না। তবে ব্লগার ব্যবহারকারীদের জন্য এরকম কোন প্লাগিন সিস্টেম নেই তাই তাদের ক্ষেত্রে সবচেয়ে উত্তম হলো ম্যানুয়াল ভাবে সিস্টেমটিকে ঠিক করে নেওয়া।
চলুন তাহলে দেখে নেইয়কিভাবে ম্যানুয়াল সিস্টেম অ্যাপ ইনভ্যালিড ক্লিককে প্রতিহত করা যায়?
আপনি যখন দেখবেন এক সপ্তাহ বা তার বেশি সময় ধরে আপনার ওয়েবসাইট এ ক্লিক অনেক বেশি হচ্ছে তখন আপনাকে কি করতে হবে তার বিস্তারিত এখন আমরা দেখব। উল্লেখ্য যে নিম্নোক্ত নিয়মটি ওয়ার্ডপ্রেস এবং ব্লগ উভয়ের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে। চলুন শুরু করা যাক-
১. সর্বপ্রথম আপনার নিজস্ব এডসেন্স একাউন্টে প্রবেশ করতে হবে।
২. এরপর একাউন্টের সর্ববামে 2 নাম্বার অপশন “Ads“ এ ক্লিক করতে হবে। এখান থেকে সরাসরি “By ad unit” এ যেয়ে নিজের তৈরিকৃত বিভিন্ন ম্যানুয়াল এড কোড সমূহ যেগুলোকে আপনি আপনার ওয়েবসাইটের বিভিন্ন স্থান বা লে-আউট বসিয়েছেন সেগুলো সব গুলোকে রিমুভ করে দিতে হবে। অ্যাডসেন্স অ্যাকাউন্ট থেকে ডিলিট নয় কিন্তু শুধুমাত্র ওয়েবসাইট থেকে সরিয়ে ফেলতে হবে।
৩. এরপরের কাজ হবে “By site” নিয়ে। এখানে মূলত অটো অ্যাড অপশনটি অন করা থাকে। এখানে আপনার কাজ হবে নিজের পেন্সিল আইকন বারা এডিট অপশনে ক্লিক করা। এরপরের পেজ আসবে সেখানে আপনাকে কিছু অপশন চেঞ্জ করতে হবে। যেমন- অটো এড অপশনাল কোন চেঞ্জ হবে না, অন থাকবে। এরপর “Ad format” অপশন থেকে “In-page ads” অপশনটি বন্ধ করে দিতে হবে। এই অপশনটি বন্ধ করলে আপনার সুবিধা হবে আপনার পোস্টের মধ্যে অটোমেটিক ভাবে যে সমস্ত অ্যাড গুলো দেখানো হতো সেগুলো আর দেখানো হবে না এতে করে আপনার অতিরিক্ত ইনভ্যালিডক্লিক এর সংখ্যা কমে আসবে।
৪. এরপরের কাজ হবে অপশন থেকে ”Anchor Ads” এই অপশনটি অফ করে দেওয়া। এনকোর এড হল সেই সমস্ত এন্ড যেগুলো আপনার ওয়েবসাইটের মধ্যে ফিক্সট অবস্থায় থাকে যে ব্যক্তি আপনি চাইলেও সরাতে পারবেন না বা কেটে দিতে পারবেন না। তবে “Vignette ads” এই অপশনটি চালু রাখবেন।
সব ধরনের এড যদি বন্ধ করে দেওয়া থাকে তাহলে এডসেন্স থেকে ইনকাম হবে কি করে?
আপনার অপশন এর ক্ষেত্রে ভিগ্নেট এড অল আছে। তার আপনি দৃশ্যমান সমস্ত অ্যাড অফ হয়ে গেলেও কোন ব্যক্তি যখন আপনার ওয়েবসাইটের কোন লিংকে ক্লিক করবে তখন আপনার অ্যাডগুলো শো করবে। এইভাবে কোনো ব্যাক্তি যদি শত্রুতাবশত আপনার ওয়েবসাইটের অতিরিক্ত ইনভ্যালিড ক্লিক সৃষ্টি করতে চায় তবে সে এই কাজটি হতে ব্যর্থ হবে। কেননা vignette ads এর ক্ষেত্রেএকজন ব্যক্তিকে ঘন্টায় একটি মাত্র অ্যাড শো করে। তাই কেউ চাইলেও অতিরিক্ত ক্লিক করতে পারবে না।
তাহলে আপনার অ্যাকাউন্টের সিটিআর এমনি কমে যাবে। এইভাবে কিছুদিন ফলো করলেই দেখবেন আপনার অ্যাকাউন্টের সিটিআর অটোমেটিকভাবে কমে গেছে। এরপরে স্বাভাবিক অবস্থা বজায় থাকলে আপনি তখন আপনার অ্যাকাউন্টের আবার সেটিংসগুলো পূর্বের অবস্থায় নিয়ে যাবেন তার তাহলে আবার আপনার অ্যাকাউন্টের ভিউও বাড়তে থাকবে এইভাবে আপনি চাইলেই আপনার ইচ্ছামত সমস্ত অ্যাড কে নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন।
এই পদ্ধতিতে আপনি আপনার ইনভ্যালিড পিকগুলো কে নিয়ন্ত্রণ করে আপনার এডসেন্স একাউন্ট থেকে সুরক্ষিত রাখতে পারবেন।
সর্বশেষ কথাই বলতে চাই একটি ওয়েবসাইট তৈরি করা থেকে তাকে প্রতিষ্ঠা করতে একটি মানুষকে অনেক পরিশ্রম করতে হয়। আবার এখান থেকেই একটি মানুষের সমস্ত মাসের খরচ সহ তার জীবিকা নির্ভর হয়ে থাকেন। অনেক সময় এমনও হয়ে দাঁড়ায় যে এটি একমাত্র জীবিকা নির্বাহের পথ। তাই কেউ যদি শত্রুতাবশত অন্যের ইনকাম নষ্ট করার জন্য এই ধরনের কাজ করে থাকেন তবে তাদেরকে বলব দয়া করে কারো ইনকামের পথে বাধা সৃষ্টি করবেন না। আপনার একটা হিংসা অন্য একটি মানুষের সমস্ত জীবনকে বরবাদ করে দিতে পারে।
আপনার জন্য আরো কিছু পোস্ট:
বাংলা অভ্র ফন্ট ডাউনলোড ২০২৪ | Avro Unicode Font Free Download