জেনে নিন ফেসবুক আইডি নিরাপদ রাখার উপায়। অসতর্কতার জন্য বর্তমানে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে অনেকেরই ফেসবুক অ্যাকাউন্ট হ্যাক হয়ে যাবার ঘটনা শোনা যাচ্ছে। ফলে আমাদেরকে অনেক রকম সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে। ফেসবুক আইডি নিরাপদ রাখার উপায বা অন্যান্য সোশ্যাল মিডিয়&##2494;র এ্যাকাউন্ট সুরক্ষিত রাখার জন্য কোন কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার না হলেও চলবে।
একটু সর্তকতা ও কিছু নিষেধাজ্ঞা মেনে চললেই আপনার অ্যাকাউন্ট আপনি নিজেই নিরাপদে রাখতে পারবেন। কিছু উপায় বা পদ্ধতি নিয়ে নিচে আলোচনা করা হলো। নিম্নোক্ত উপায় বা পদ্ধতি অনুসরণ করলে আপনার অ্যাকাউন্ট নিরাপদে থাকতে পারে।
শক্তিশালী পাসওয়ার্ড | ফেসবুক আইডি নিরাপদ রাখার উপায়
আপনার অ্যাকাউন্টকে নিরাপদে রাখতে সবার আগে যেটি দরকার তা হল একটি শক্তিশালী পাসওয়ার্ড, যাতে করে কেউ যেন
ব্রুট ফোর্স আক্রমণ করে আপনার আইডিতে ঢুকে সহজেই কোন তথ্য আপনার আইডি থেকে খুঁজে বের করতে কিংবা চুরি করতে না পারে। আমরা অনেক সময় নিজের সুবিধার্থে সহজ পাসওয়ার্ড দিয়ে থাকি। কিন্তু না, এটা আপনারা কখনই করবেন না।
আর মনে রাখবেন আপনার পাসওয়ার্ডটি যেন ক্যারেক্টার, সংখ্যা এবং এলফাবেট দিয়ে জটিল একটি পাসওয়ার্ড হয়ে থাকে যেন হ্যাকাররা আপনার আইডিটি সহজেই হ্যাক করতে না পারে। এজন্য বলছিলাম যে আপনার পাসওয়ার্ডটি যেন কমপ্লেক্স বা জটিল হয়। এর ফলে আপনার আইডিটি অনেক বেশি সিকিউর বা নিরাপদ হবে। আর কঠিন পাসওয়ার্ড মনে রাখার ঝামেলা অ্যাড়াতে লাস্টপাস ব্যবহার করতে পারেন।
আরও দেখুন: আইফোনে যেকোন ডকুমেন্ট স্ক্যান করার পদ্ধতি জেনে নিন
ফেসবুকে সকল তথ্য সঠিক দিতে হবে | ফেসবুক আইডি নিরাপদ রাখার উপায়
আপনার ফেসবুক অ্যাকাউন্ট সিকিউর রাখার দ্বিতীয় উপায় হল আপনার আইডির সকল তথ্য সঠিক হতে হবে। কারণ কখনো কোন কারণে যদি আপনার আইডি হ্যাক হয় তাহলে যেন আপনি আপনার আইডির জন্য ফেসবুকের কাছে রিপোর্ট করে আপনার ইনফরমেশনগুলো ভ্যালিডেড করার জন্য আপনাকে যে পেপারসগুলো যেমনঃ আইডি, নাম, পাসওয়ার্ড দেওয়া হয় এগুলো ভ্যারিফাই করে যেন আপনি আপনার এ্যাকাউন্টটি ফেরত আনতে পারেন সেজন্য আপনাকে অবশ্যই সঠিক নাম বা তথ্য ব্যবহার করতে হবে। অন্য কোন ছদ্মনাম যেমনঃ মেঘহীনা আকাশ, রংধনু এসব ব্যবহার করলে আপনার ফেসবুক অ্যাকাউন্টটিকে ফিরিয়ে আনা কঠিন হয়ে পড়বে।
টু স্টেপ ভ্যারিফিকেশন | ফেসবুক আইডি নিরাপদ রাখার উপায়
টু স্টেপ ভ্যারিফিকেশন হচ্ছে আপনি যখন আপনার ফেসবুক বা সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্টে লগইন করতে যাবেন তখন আপনার ঐ ফেসবুক কিংবা সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্ট থেকে আপনার ফোনে একটা এসএমএস পাঠানো হবে উক্ত এসএমএসে একটা কোড পাঠানো হবে। যার কোড হবে ওটিপি (OTP) অর্থাৎ ওয়ান টাইম পাসওয়ার্ড (one time password)। এই পাসওয়ার্ড দিয়ে আপনারা লগইন করবেন। টু স্টেপ পাসওয়ার্ড ব্যবহার করলে আপনার আইডিটি অনেক বেশি নিরাপদ থাকবে এবং কেউ আপনার ফেসবুকের পাসওয়ার্ড পেয়ে গেলেও অ্যাকাউন্টে ঢুকতে পারবে না।
অ্যাপ বা ওয়েবসাইট পারমিশন | ফেসবুক আইডি নিরাপদ রাখার উপায়
বিভিন্ন সাইটে বা অ্যাপে ফেসবুক কিংবা অন্যান্য সাইট দিয়ে আমরা যখন লগইন করতে যাই তখন আমাদের নানান পারমিশন দিতে হয়। আর এজন্য আমরা যে অ্যাপটি বা সাইটটি ব্যবহার করব তার পারমিশন আছে কিনা তা চেক করে নিতে হয়। অর্থাৎ আপনারা লক্ষ্য করে দেখতে পারেন যে অ্যাপগুলো বা সাইটগুলো ট্রাস্টেড কিনা। যদি ট্রাস্টেড বা প্রয়োজনীয় হয় তাহলে শুধুমাত্র সেই অ্যাপগুলোকেই অ্যাপ্লাই করুন আর অপ্রয়োজনীয় অ্যাপ/ সাইটগুলো সেটিংস থেকে রিমুভ করে দিন।
হাইড লগইন ইনফরমেশন | ফেসবুক আইডি নিরাপদ রাখার উপায়
কোন সেনসিটিভ ইনফরমেশন আপনারা ফেসবুক কিংবা সোশ্যাল মিডিয়াতে ব্যবহার করবেন না। সেনসিটিভ ইনফরমেশন বলতে এখানে বুঝিয়েছি আপনার ফোন নাম্বার, ইমেইল অ্যাড্রেস যেগুলো দিয়ে আপনার ফেসবুক কিংবা সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্ট খোলা আছে সেগুলো অনলিমি বা প্রাইভেছি দিয়ে হাইড করে রাখবেন যেন হ্যাকাররা আপনার অ্যাকাউন্ট সহজেই হ্যাক করতে না পারে।
আরও দেখুন: ফ্রি SMS পাঠানোর অ্যাপ ডাউনলোড করুন
অচেনা লিংকে ক্লিক না করা | ফেসবুক আইডি নিরাপদ রাখার উপায়
আপনারা কখনই কোন অপরিচিত লিঙ্কে ক্লিক করবেন না। এমনও হতে পারে যে আপনি অচেনা কোন লিঙ্কে ক্লিক করলেন আর হ্যাকাররা সেই লিঙ্ক থেকে আপনার প্রয়োজনীয় তথ্য খুঁজে বের করে আপনার আইডিটি হ্যাক করল। এজন্য আমার মতামত অনুযায়ী আপনি অপরিচিত কোন লিঙ্কে ক্লিক না করলে আপনার আইডিকে অনেক বেশী সিকিউর রাখতে পারবেন।
রিমুভ প্রিভিয়াস লগইন | ফেসবুক আইডি নিরাপদ রাখার উপায়
পূর্বে যেসকল ডিভাইসে লগইন করেছেন সেগুলো থেকে লগ আউট করতে হবে। এটা করার জন্য ফেসবুক কিংবা সোশ্যাল মিডিয়াতে অপশন আছে। আপনারা সেটিংসে গিয়ে প্রিভিয়াসলি লগইন করা ডিভাইসগুলোকে লগ আউট করে দিন সেই সাথে সেশনগুলোকে কিল করবেন যেন অন্যকেউ লগইন করতে না পারে।
অন্যকারো ডিভাইস থেকে ফেসবুক লগইন না করা | ফেসবুক আইডি নিরাপদ রাখার উপায়
অন্যকারো ডিভাইস হতে পারে আপনার ফ্রেন্ডের পিসি কিংবা ফোন থেকে ফেসবুক লগইন করবেন না যদি না আপনার ফ্রেন্ড বিশ্বস্ত হয়। তা না হলে এমন হতে পারে যে,
কিলগারের মাধ্যমে আপনার ফ্রেন্ড আপনার পাসওয়ার্ড হ্যাক করতে পারে।
ফেসবুকে দাদাগিরি না করা | ফেসবুক আইডি নিরাপদ রাখার উপায়
আমরা অনেকেই মনে করি যে সোশ্যাল মিডিয়াতে মারামারি,গালিগালাজ করলে হয়তো কেউ আমার কোন ক্ষতি করতে পারবে না। কিন্তু না আপনার ভাবনা সম্পুর্ণ ভুল, কারন আপনি তো সোশ্যাল মিডিয়ার প্রত্যেককে চিনেন না তাইনা? অনেক সময় এমন হতে পারে আপনি সোশ্যাল মিডিয়াতে কাউকে গালি দিলেন আর তিনি আপনার কোন একটি লিঙ্ক যেকোন মাধ্যমে কপি করে আপনার আইডির ক্ষতি করল তখন ব্যাপারটি অন্য রকম দেখাবে। তাই আপনার বা আমার প্রত্যেকের উচিত ফেসবুক কিংবা সোশ্যাল মিডিয়াতে কাউকে গালি না দেওয়া।
প্রো (Professional) হ্যাকার ভাড়া করা | ফেসবুক আইডি নিরাপদ রাখার উপায়
প্রো মানে প্রফেশনাল। কোন ব্যক্তি যদি একজন প্রফেশনাল হ্যাকারকে ভাড়া নিয়ে তার এ্যাকাউন্ট হ্যাক করতে বলে আর হ্যাকার যদি উক্ত ব্যক্তির আইডির সিকিউরিটি চেক করে বলে দেয় যে তার এ্যাকাউন্ট কতটা সিকিউর বা নিরাপদ তাহলে উক্ত ব্যক্তি নিশ্চিন্ত থাকবে এজন্য যে তার আইডিতে কোন সমস্যা নেই। তাই মাঝে মধ্যে আপনারাও প্রফেশনাল হ্যাকার ভাড়া করে দেখতে পারেন যে আপনাদের ফেসবুক বা সামাজিক যোগাযোগের অ্যাকাউন্ট কতটা নিরাপদ।আমার মনে হয় উক্ত আর্টিকেলটির বর্ণনা দিয়ে আমি আপনাদেরকে ফেসবুক কিংবা সোশ্যাল মিডিয়ার এ্যাকাউন্ট নিরাপদে রাখার জন্য ভালো কয়েকটি পদ্ধতি বা উপায় শেয়ার করতে পেরেছি। উক্ত আর্টিকেলটি যদি আপনাদের ভালো লেগে থাকে তাহলে লাইক, কমেন্ট ও শেয়ার করতে ভুলবেন না।
আরও দেখুন: